ছোট থেকে আমরা শুনে এসেছি, “সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার”। আগে গঙ্গাসাগরে যাওয়া ছিল সত্যিই কষ্টকর। সাগরসংগমে গিয়ে তীর্থ দর্শনের পুন্য লাভ করা ছিল কঠিন পথযাত্রার সমান। এমনকি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার “কপালকুণ্ডলা” উপন্যাসে লিখেছিলেন—তীর্থ দর্শনের মতো পুন্য, বাড়ি বসেই করা সম্ভব। তবে আজকের দিনে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে গঙ্গাসাগর যাত্রা অনেক সহজ হয়েছে।
এই ১৫ জানুয়ারিতে গঙ্গাসাগরে পুন্যস্নান তিথি রয়েছে। তাই যারা যাত্রা করছেন, তাদের জন্য শেয়ার করলাম বিভিন্ন বিকল্প রুট।
নামখানা থেকে গঙ্গাসাগর যাত্রা:
- নামখানা স্টেশন থেকে টোটো: প্রথমে টোটোতে জেটিঘাট পৌঁছান। ভাড়া: ১৫ টাকা।
- লঞ্চে বেনুবন জেটিঘাট: নামখানা থেকে লঞ্চে বেনুবন জেটিঘাট।
- টোটো/অটো করে কপিল মুনির আশ্রম: বেনুবন জেটিঘাট থেকে টোটো বা অটো নিয়ে সরাসরি কপিল মুনির আশ্রম।
কাকদ্বীপ থেকে গঙ্গাসাগর যাত্রা:
- কাকদ্বীপ স্টেশন থেকে লট নং ৮: কাকদ্বীপ স্টেশন থেকে টোটো নিন। ভাড়া: ১৫ টাকা।
- ভেসেলে কঁচুবেরিয়া: লট নং ৮ থেকে ভেসেলে কঁচুবেরিয়া।
- কঁচুবেরিয়া থেকে গন্তব্য: এখান থেকে টোটো, অটো, বা রিজার্ভ গাড়ি করে গঙ্গাসাগর। ভাড়া: ৫০-৬০ টাকা।
শিয়ালদহ থেকে গঙ্গাসাগর যাত্রার বিকল্প রুট:
- বাস: শিয়ালদহ বা ধর্মতলা থেকে নামখানা বা কাকদ্বীপগামী ডাইরেক্ট বাস। তবে ডায়মন্ড হারবার রোডের যানজট মাথায় রাখুন।
- ট্রেন ও বাস সংযুক্ত রুট:
- শিয়ালদহ থেকে ডায়মন্ড হারবার ট্রেন। সময়: ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। ভাড়া: ১৫ টাকা।
- ডায়মন্ড হারবার স্টেশন থেকে মেন রোডে এসে লোকাল বা সরকারি বাস নিন। বাস ভাড়া: ৪০ টাকা।
- নয়া রাস্তার মোড়ে নেমে টোটো ধরুন লট নং ৮ জেটিঘাট।
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা:
- পুন্যস্নানের সময় প্রচুর ভিড় হয়। তাই যাত্রা শুরু করার আগে নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করুন।
- বিশেষত যারা নতুন যাচ্ছেন, তারা জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখুন।
আমি নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি কাকদ্বীপ ও জেটিঘাটের প্রচণ্ড ভিড়। তাই একটু পরিকল্পনা করে সময়মতো রওনা দিলে যাত্রা সহজ হবে।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও বানিয়েছি, যেখানে কাকদ্বীপের জেটিঘাটের ভিড় এবং এই রুটগুলোর বিস্তারিত বিবরণ দেখানো হয়েছে। দেখে নিতে পারেন। আশা করি, এই ব্লগ আপনাদের কাজে লাগবে।
তথ্য ও ছবি : সান্তনু পাত্র
