অরিজিৎ গাঙ্গুলী : আমাদের বাঙালিদের একটা চিরাচরিত স্বভাব আগাগোড়া ছিলই যে আমরা কোনো কাজ বিদেশে appreciation না পেলে তার মর্ম বুঝি না,সেই “পথের পাঁচালী” ,”অপরাজিত” সময় থেকেই হয়ে আসছে। এই যে নতুন কাজগুলো আগে বিদেশ ঘুরে এক গাদা অ্যাওয়ার্ড নিয়ে মুক্তি পেলো, এবার বাংলায় টনক নড়ছে। শোনা গেছে এই ছবি জাপানে এতো সমাদৃত হয়েছে যে পরিচালকের পরের কাজের জন্যে জাপান গভর্নমেন্ট ৩ কোটি অফার অবধি করেছে। কী আছে ছবিতে যা মেট্রোপলিটন শহরের দর্শক ২:৩০ ঘণ্টা ধরে ধৈর্যের সাথে দেখছে। শুধু কি ঐ অ্যাওয়ার্ড গুলো কারণ!.. একেবারেই নয়, ছবির শুরুর প্রথম দৃশ্য থেকে বোঝা গেছিল পরিচালকের মুন্সিয়ানা তার ক্যামেরার কাজ ,তার প্রতিটা ফ্রেম যেন এক একটা work of Art। আমি বলছি এই ছবি বড় পর্দায় ছাড়া আপনি উপভোগ করতে পারবেন না, কারণ ঐ দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ, কাশবন,মেঠো পথ, রাতের জোনাকি এই শহরে কোথায়। সেই নির্মল এক একটা দৃশ্যে যেন অক্সিজেন পেয়েছে গোটা হলের দর্শক। বার দুয়েক যেন শোনা গেলো কোথায় এমন সুন্দর গ্রাম? আর কি আছে? অনেক কিছু তবে দুই বন্ধুর গল্প মূল।

যাদের হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক রং ধরেনি, যারা নিষ্পাপ। সেই নিষ্পাপ মন আর তাদের বাল্যকালের গল্পগুলো এই দর্শক আসনে বসে থাকা অনেক পৌড়ের বাল্য স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে বাধ্য। আমাদের মতন সহুরে মানুষ যেন পেল এক চিলতে খোলা হাওয়া, ইট কাঠ পাথরের শহরে ধুলোয় ঢাকা বাতাসে একটা সিনেমা কিছু অক্সিজেন এনে দিল। এই ছবি আপনাকে একটা শান্তি আনবে, সরলতার মড়ক দিয়ে আপনাকে ফিরিয়ে দেবে শৈশব। কথা দিচ্ছি বেরিয়ে আপনি চোখের চিকচিক করা জল রুমাল দিয়ে মুছবেন, কিন্তু মুখে লেগে থাকবে পরিতৃপ্তির হাসি। আপনারা “কাঁনতারা” দেখতে মাল্টিপ্লেক্স ছোটেন, বাংলা সিনেমা অ্যাওয়ার্ড পেলে দেখেন, তাই বলছি এই ছবি অনেক দূর যাবে , তাই সুযোগ থাকতে দেখে আসুন। ও হ্যাঁ শুধু এটা নয় আরেকটি ছবিও বিদেশ ঘুরে অনেক সন্মান নিয়ে এসচ্ছে “ঝিল্লি”. আমি তো দেখবোই। আপনাদের অনুরোধ ভালো বাংলা ছবির পাশে থাকুন, না হলে এই কাজ গুলো আর হয়তো সেই উৎসাহ হারাবে আর পাগলু নিয়ে পরে আপনি বাংলা ছবি নিয়ে গালমন্দ করবেন । হলে দেখুন না হলে সেই মজা কিন্তু পাবেন না।